জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনে উত্তাল কাকরাইল

ছাত্রাবাস, বাজেট ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের দাবিতে ঘোষিত লংমার্চে অংশ নিতে গিয়ে পুলিশের বাধা, লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের মুখে পড়েন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে লংমার্চ ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা সেখানেই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে বিকেলে আরও শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা আটটি বাসে করে যোগ দেন এই অবস্থান কর্মসূচিতে।
বিক্ষোভে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিনা শরমীন, প্রক্টর অধ্যাপক তাজাম্মুল হকসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। বিকেল পাঁচটার দিকে উপাচার্যের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় যায় এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, দুপুরে কাকরাইল মোড়ে পুলিশের হামলায় অনেক শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্দিন এবং সহকারী প্রক্টরও। তাঁরা বলেন, দাবি আদায় এবং পুলিশের হামলার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
বিক্ষোভকারীদের তিন দফা দাবি হলো:
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি কার্যকর করা,
২. বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন করা,
৩. দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ একনেক সভায় অনুমোদন দিয়ে বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করা।
লংমার্চের অংশ হিসেবে আজ দুপুরে শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে কাকরাইলের দিকে রওনা হন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কাকরাইল মসজিদের সামনে পুলিশ ব্যারিকেড দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড এবং জলকামান ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নেয়।
এ বিষয়ে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম জানান, যমুনা অভিমুখে যাওয়ার অনুমতি নেই, সেখানে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। আইন ভঙ্গ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে আন্দোলনে ছাত্রদল, ছাত্র অধিকার পরিষদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারাও অংশ নেন। আন্দোলনকারীরা জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা কাকরাইলে অবস্থান চালিয়ে যাবেন।