মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ০৯:৫১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
মুকসুদপুরে বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচির আওতায় ক্রিকেট প্রতিযোগিতা সম্পন্ন পরিবেশ দুষণকারী অবৈধ সিসা তৈরীর কারখানায় জরিমানা চাঁদাবাজি বন্ধের দাবী জানিয়ে কাফনের কাপড় পড়ে মানববন্ধন মুকসুদপুরে বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের নতুন কমিটি গঠন  জাপানের রাষ্ট্রদূতের সাথে আমীরে জামায়াতের বৈঠক অনুষ্ঠিত লোহাগড়ায় জাল রশিদে চাঁদাবাজির অভিযোগ অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে ইরানে ডজনখানেক বিমান হামলা!জানালো ইসরাইলি সেনাবাহিনী উন্নয়নে বাধা দিল প্রভাবশালীরা! প্রাণনাশের হুমকিতে থানায় অভিযোগ দেশের পুঁজিবাজারে ইরানে মার্কিন হামলার প্রভাব

মানবিক করিডরের প্রশ্নে বাংলাদেশের অবস্থান।

অনলাইন ডেস্ক / ৫৩ সময়
আপডেট: শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫

বাংলাদেশের রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডর (humanitarian corridor) প্রতিষ্ঠা নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে সরকার, সামরিক বাহিনী ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের প্রশাসন রাখাইনে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি “মানবিক প্যাসেজ” বা ত্রাণ সরবরাহের পথ নিয়ে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, “করিডরের বিষয়টি চূড়ান্ত হলে সবার সঙ্গে কথা বলে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে”।

অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মো. ইউনুস

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলেন, “No bloody corridor business”। তিনি রাখাইনে মানবিক করিডর স্থাপনের প্রস্তাবকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেন ।

বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মানবিক করিডর প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। তারা মনে করেন, “করিডর”, “চ্যানেল” বা “পাথওয়ে”—যে নামেই ডাকা হোক না কেন, এটি বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তারা আরও অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ না করেই এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে ।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান জানান, জাতিসংঘের মহাসচিব “করিডর” শব্দটি ব্যবহার করেননি; বরং “মানবিক চ্যানেল” শব্দটি ব্যবহার করেছেন, যার অর্থ ভিন্ন। তিনি বলেন, রাখাইনে যেকোনো মানবিক তৎপরতার জন্য দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা প্রয়োজন, এবং বাংলাদেশ কোনো “প্রক্সি ওয়ার”-এ জড়াবে না ।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান

রাখাইনে মানবিক করিডর প্রতিষ্ঠা নিয়ে বাংলাদেশের প্রশাসন, সামরিক বাহিনী ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ স্পষ্ট। যদিও সরকার জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানোর জন্য নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে, তবে সামরিক বাহিনী ও রাজনৈতিক দলগুলো এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করছে। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐকমত্য ও স্বচ্ছতা বজায় রাখা জরুরি, যাতে দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।

মানবিক করিডর কি?

মানবিক করিডর (Humanitarian Corridor) হলো একটি বিশেষ নিরাপদ পথ বা অঞ্চল, যা সাধারণত যুদ্ধ, সশস্ত্র সংঘাত, বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ জনগণ বা বেসামরিক ব্যক্তিদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে, ত্রাণ পৌঁছাতে বা চিকিৎসা সেবা দিতে ব্যবহৃত হয়।

প্রতিকী ছবি

মানবিক করিডরের মূল বৈশিষ্ট্য:

১. নিরাপদ পথ: এই করিডর সাধারণত যুদ্ধরত পক্ষগুলোর সম্মতিতে নির্ধারিত হয়, যাতে সশস্ত্র আক্রমণ থেকে মুক্ত থাকে।

২. ত্রাণ সরবরাহের জন্য: খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং অন্যান্য মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।

৩. বেসামরিকদের সরিয়ে নেওয়া: যুদ্ধ বা সংকটপূর্ণ অঞ্চল থেকে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়।

৪. আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে পরিচালিত: আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও জেনেভা কনভেনশন অনুসারে এই করিডরের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

 

উদাহরণ:

সিরিয়া বা ইউক্রেন যুদ্ধের সময়, জাতিসংঘ বা রেড ক্রসের সহযোগিতায় মানবিক করিডর স্থাপন করা হয়েছে বেসামরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার জন্য।

প্রাকৃতিক দুর্যোগে (যেমন ভূমিকম্প বা বন্যা) ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে লোকজনকে উদ্ধার করতেও এ ধরনের করিডর ব্যবহার হতে পারে।

প্রধান লক্ষ্য হলো মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা এবং সাধারণ মানুষকে রক্ষা করা, যাতে তারা সংঘাত বা দুর্যোগের চরম প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে পারেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর