মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
মুকসুদপুরে বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচির আওতায় ক্রিকেট প্রতিযোগিতা সম্পন্ন পরিবেশ দুষণকারী অবৈধ সিসা তৈরীর কারখানায় জরিমানা চাঁদাবাজি বন্ধের দাবী জানিয়ে কাফনের কাপড় পড়ে মানববন্ধন মুকসুদপুরে বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের নতুন কমিটি গঠন  জাপানের রাষ্ট্রদূতের সাথে আমীরে জামায়াতের বৈঠক অনুষ্ঠিত লোহাগড়ায় জাল রশিদে চাঁদাবাজির অভিযোগ অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে ইরানে ডজনখানেক বিমান হামলা!জানালো ইসরাইলি সেনাবাহিনী উন্নয়নে বাধা দিল প্রভাবশালীরা! প্রাণনাশের হুমকিতে থানায় অভিযোগ দেশের পুঁজিবাজারে ইরানে মার্কিন হামলার প্রভাব

বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পরিবর্তন এনে অধ্যাদেশ জারি অন্তর্বর্তী সরকারের

নিজস্ব প্রতিবেদক / ১০৫ সময়
আপডেট: বুধবার, ৪ জুন, ২০২৫

বাংলাদেশ

বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পরিবর্তন এনে অধ্যাদেশ জারি

নিজস্ব প্রতিবেদক  ঢাকা

আপডেট: ৪ জুন ২০২৫, ১০:৫২ পিএম

 

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন সংশোধন করে বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ লক্ষ্যে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় গত মঙ্গলবার রাতে একটি সংশোধিত অধ্যাদেশ জারি করেছে। নতুন সংজ্ঞা অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের (মুজিবনগর সরকার) সঙ্গে সম্পৃক্ত জাতীয় পরিষদের সদস্য (এমএনএ) ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমপিএ), যাঁরা গণপরিষদের সদস্য হিসেবে বিবেচিত হতেন, এখন থেকে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’র পরিবর্তে ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে গণ্য হবেন।

অধ্যাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সহযোগীদের পাঁচটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রথমত, বিদেশে অবস্থানকালে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশেষ অবদান রাখা পেশাজীবী ও বিশ্বজনমত গঠনে সক্রিয় নাগরিকরা। দ্বিতীয়ত, মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারী, দূত, চিকিৎসক, নার্স ও সহকারীরা। তৃতীয়ত, মুজিবনগর সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত এমএনএ ও এমপিএ, যাঁরা গণপরিষদের সদস্য ছিলেন। চতুর্থত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী, কলাকুশলী ও দেশ-বিদেশের সাংবাদিকরা। পঞ্চমত, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যরা।

একই সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নতুনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত যাঁরা দেশের ভেতরে যুদ্ধের প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, ভারতীয় প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবং পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, তাঁরা বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন। এতে রাজাকার, আলবদর, আলশামস, মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম এবং শান্তি কমিটির বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেওয়াদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

নতুন সংজ্ঞায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনী, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর), পুলিশ, মুক্তিবাহিনী, মুজিবনগর সরকার স্বীকৃত বাহিনী, নৌ কমান্ডো, কিলো ফোর্স ও আনসার সদস্যদের বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য করা হবে। নির্যাতিত নারী (বীরাঙ্গনা) ও ফিল্ড হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও সহকারীরাও এবার থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদা পাবেন।

এ ছাড়া ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন’-এ যে জায়গায় ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ শব্দ ছিল, তা পরিবর্তন করে অধ্যাদেশে শুধু ‘মুক্তিযুদ্ধ’ শব্দ ব্যবহার করে বলা হয়েছে, এটি ছিল হানাদার ও দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী এবং তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পরিচালিত যুদ্ধ।

গত ১৫ মে উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল অধ্যাদেশটি শর্তসাপেক্ষে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল এবং সংজ্ঞায় এই পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় সরকার চূড়ান্তভাবে সংশোধিত অধ্যাদেশটি জারি করেছে।

এই অধ্যাদেশকে কেন্দ্র করে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারবর্গের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ এটিকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সংরক্ষণের পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ মনে করছেন—এটি অতীতের স্বীকৃতিকে খর্ব করার শামিল।

এ বিষয়ে সরকার বলছে, এই পরিবর্তনের মূল উদ্দেশ্য হলো মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত যোদ্ধাদের স্বীকৃতি নিশ্চিত করা এবং সহযোগী ভূমিকায় অবদান রাখা ব্যক্তিদের জন্য পৃথক শ্রেণি নির্ধারণ করে সুনির্দিষ্ট মর্যাদা ও মূল্যায়ন প্রতিষ্ঠা করা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর