ছেলে দেবরসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড
ছেলে দেবরসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। কুষ্টিয়া জেলার মিরপুরে উপজেলার কাটদহচর এলাকায় সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে বিধবা এক বৃদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মরদেহ গুমের দায়ে নিহতের একমাত্র ছেলে ও দেবরসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৫ জুন) বিকেল ৪টার দিকে কুষ্টিয়ার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রুহুল আমিনের আদালত এ রায় দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি বিকেল ৪টার দিকে মমতাজ বেগম ওরফে জাগা খাতুন তার নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় নিহতের একমাত্র ছেলে মুন্না বাবু নিজের মা নিখোঁজ হওয়ার চারদিন পর ২৫ জানুয়ারি মিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। প্রায় একমাস পর ২৩ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়া জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে সন্দেহ হলে নিহতের ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এতে নিহতের ছেলে ঘটনার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততাসহ তার চাচা আব্দুল কাদের ও বন্ধু রাব্বি আলামিনকে এ ঘটনায় জড়িত বলে উল্লেখ করেন। গোয়েন্দা পুলিশ বাকি দুজনকেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হয় এবং আটক আসামিরা স্বীকারোক্তি দেন যে, বিধবা মমতাজের স্বামীর অবর্তমানে তার কয়েক কোটি টাকার জমি-জায়গা ও পোড়াদহের কাপড় হাটে ৭-৮টি দোকান হাতিয়ে নিতেই শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ গুমের উদ্দেশ্যে পার্শ্ববর্তী একটি পুকুর পাড়ে পুঁতে রাখা হয়েছে। এমন স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ওই স্থান থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে মমতাজের বস্তাবন্দি গলিত মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই তোরাব আলী বাদী হয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে মিরপুর থানায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল মিরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. কায়েশ মিয়া তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগ এনে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী জানান, সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার লোভে বিধবা বৃদ্ধাকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে মুন্না বাবু, আব্দুল কাদের ও রাব্বী আলামিনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমাণিত হওয়ায় তাদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।