মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ০৯:৩০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
মুকসুদপুরে বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচির আওতায় ক্রিকেট প্রতিযোগিতা সম্পন্ন পরিবেশ দুষণকারী অবৈধ সিসা তৈরীর কারখানায় জরিমানা চাঁদাবাজি বন্ধের দাবী জানিয়ে কাফনের কাপড় পড়ে মানববন্ধন মুকসুদপুরে বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের নতুন কমিটি গঠন  জাপানের রাষ্ট্রদূতের সাথে আমীরে জামায়াতের বৈঠক অনুষ্ঠিত লোহাগড়ায় জাল রশিদে চাঁদাবাজির অভিযোগ অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে ইরানে ডজনখানেক বিমান হামলা!জানালো ইসরাইলি সেনাবাহিনী উন্নয়নে বাধা দিল প্রভাবশালীরা! প্রাণনাশের হুমকিতে থানায় অভিযোগ দেশের পুঁজিবাজারে ইরানে মার্কিন হামলার প্রভাব

মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও পাহাড়ে তাদের বসবাস

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৫২ সময়
আপডেট: মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০২৪

রাঙামাটি: দেশের বৃহৎ জেলা রাঙামাটি। একদিকে সুউচ্চ পাহাড় অন্যদিকে সুবিশাল কাপ্তাই হ্রদ সমতল ভূমি গ্রাস করেছে অবলীলায়।

সঙ্গত কারণে বসবাসের শহর অত্যন্ত ছোট। মাত্র কয়েক কিলোমিটার জুড়ে কাপ্তাই হ্রদ ঘেঁষে জেলা শহর গঠিত।

মূল শহরে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্তরা বসবাস করতে পারলেও হতদরিদ্ররা ভাড়া বাড়িতে থাকার সামর্থ্য যোগানের অভাবে জীবিকার তাগিদে বসবাসের জন্য বেছে নিয়েছে পাহাড়কে। মৃত্যু নিশ্চিত তারাও জানে; এরপরও যান্ত্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় নিজেদের সচল রাখতে প্রাণের মায়া প্রাণহীন করেছেন।

অরণ্য ঘেরা সবুজ পাহাড় দেখে দেখে মানুষ বিমুগ্ধ হলেও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পাহাড় খেকোরা পাহাড় কেটে হতদরিদ্র মানুষের কাছে বিক্রি করে যাচ্ছেন। ভরছেন তাদের পকেট।

এসব ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ জায়গাগুলো কম দামে হাতের নাগালে পাওয়ায় হতদরিদ্ররা নিজেদের জীবনের শেষ সঞ্চিত সম্বল দিয়ে ক্রয় করে বসবাস করছেন। যে কারণে পাহাড় কাটছে যত, ধস হচ্ছে তত। ক্ষতি হচ্ছে সড়ক, বিদ্যুৎ, প্রাণ যাচ্ছে মানুষের। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনও এসব পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো নজির নেই। কোনোকালে ছিলেন না সরব, নীরবতার ভূমিকা পালন করেছেন।

২০১৭ সালে পাহাড় ধসে সরকারি হিসেব মতে ১২০ জন এবং পরের বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালে ১১ জনের প্রাণহানি ঘটে। এরপর থেকে প্রবল বর্ষণ শুরু হলে স্থানীয় প্রশাসনও নড়েচড়ে বসে। প্রাণহানি এড়াতে জরুরি সভা, স্বেচ্ছাসেবক দল গঠনসহ নানাবিধ পরিকল্পনা গ্রহণ করে থাকে।

সচেতন মহলরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের সরিয়ে আনার জোর দাবি জানিয়ে এলেও তাদের  নিরাপদ বসতি স্থাপনে কোনো সমাধান দিতে পারছেন না। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনও অসহায়। পুরো এলাকায় এত পাহাড় সমতল ভূমি নেই বললেও চলে।

শিমুলতলী এলাকার বাসিন্দা বলেন, আমরা এখানে মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও বসবাস করি। আমাদের কোনো জায়গা নেই, মূল শহরে ভাড়া বাসায় থাকার সামর্থ্য নেই। প্রশাসন যদি নিরাপদ স্থানে বসবাসের সুযোগ দেয় তাহলে চলে যাবো।

রূপনগর এলাকার বাসিন্দা কালাম মিয়া এবং জরিনা বেগমেরও একই কথা। তাদের নিশ্চিত নিরাপদ স্থানে বসবাসের সুযোগ দিলে এসব এলাকা ছেড়ে দেবো।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পুরো জেলা জুড়ে প্রায় পাঁচ হাজার পরিবারের প্রায় ২০ হাজার মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাস করে। শুধু জেলা শহরের ৩১টি পয়েন্টকে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের সরিয়ে আনতে প্রশাসন পুরো জেলায় ২৬৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে।

রাঙামাটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের তথ্যমতে, রোববার (৩০ জুন) সকাল থেকে সোমবার (১ জুলাই) সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।

এদিকে সোমবার থেকে ভারী বর্ষণে জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় কাচালং নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যেকোনো সময় নিম্ন এলাকাগুলো পানিতে প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন। এজন্য ওই এলাকার মানুষদের দ্রুত সময়ে সরে আসার অনুরোধ জানাচ্ছেন প্রশাসন।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মোশারফ হোসেন খান বলেন, প্রাণহানি এড়াতে  ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের সরিয়ে আনতে জেলা প্রশাসন কাজ করছে। উপজেলা পর্যায়গুলোতে একই কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর