ছাত্র-জনতাকে তারেক রহমান অভিন্দন জানিয়েছেন। অসহযোগ আন্দোলনে শেখ হাসিনার পদত্যাগের মাধ্যমে ছাত্র জনতার বিজয়কে শুভেচ্ছা জানিয়ে এই ভিডিও বার্তা জানান তিনি।

ভিডিও বার্তায় তারেক রহমান জানান, প্রিয় দেশবাসি আস্সালামু আলাইকুম। গৌরবজনক এই ঐতিহাসিক মুহুর্তে বাংলাদেশের সাহসী জনতাকে বিরচিত অভিনন্দন।হাজারও শহিদের বিনিময় জনতার ঐতিহাসিক এই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে গণহত্যাকারী খুনি হাসিনার পতন হয়েছে। রাহু মুক্ত হয়েছে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ।জনতার বিপ্লবের প্রথম ধাপ চুড়ান্ত ভাবে সফল হয়েছে।লাখো শহিদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশ কখনো পরাজয় মানতে পারেনা।এই ঐতিহাসিক বিপ্লবের মধ্যদিয়ে আবারও প্রমানিত হয়েছে দলমত নির্বিশেষে সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকলে এই বাংলাদেশকে কেউ কখনো পরাজিত করতে পারেনা, পারবে না।

প্রিয় দেশবাসী বিজয়ের এই ঐতিহাসিক মুহুর্তে আমি আজ সেই সব মায়েদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই।এই গণবিপ্লবে যারা তাদের প্রিয় সন্তানকে হারিয়েছেন। এভাবে গত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদি শাসন কালে অনেক সন্তান তার প্রিয়তম পিতাকে হারিয়েছেন।অনেক স্ত্রী তার প্রিয়তম স্বামীকে হারিয়েছেন।গুম খুন অপহরণ করে অসংখ্য মায়ের বুক খালি করে দেয়া হয়েছে।আপনাদের শহিদ মৃত্যু স্বজনদের ত্যাগ-তিতিক্ষায় ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট আরেকটা বিজয় দেখেছে।জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লব সফল করতে গিয়ে অসংখ্য ছাত্র জনতা আহত হয়েছেন।বাসায় হাসপাতালে কিংবা ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন জন্ত্রনাবিদ্ধ সময় আপনাদের পাশে আজ সারা বাংলাদেশ।খুনি হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে অসংখ্য মানুষ মিথ্যা মামলা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলায় গ্রেফতারের শিকার হয়ে কারাগারে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন।

তিনি আরো বলেন আমি অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল মামলা প্রত্যাহার এবং তাদের কারামুক্তির দাবি জানাচ্ছি। একই ভাবে জানি ছাত্র-ছাত্রী যেন ক্লাসে হোস্টেলে ফিরতে পারে এবং পরিক্ষায় অংশ নিতে পারে আশা করি সেই পদক্ষেপ দ্রুত গ্রহন করা হবে।

প্রিয় দেশ বাসী ১৮ কোটি মানুষকে জিম্মি করে সাড়ে বারো কোটি ভোটারের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে বাংলাদেশকে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিনত করা হয়েছিল।হত্যাকারী গণহত্যাকারী খুনি হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে জনগন তাদের গণতন্ত্র মানবাধিকার লুণ্ঠিত ভোটের অধিকার পুন: প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করেছে।এর মধ্য দিয়ে জনগনের বিপ্লবের প্রথম ধাপ সফলভাবে সফলকাম হয়েছে।এরপর একটি অবাধ ও সুষ্টু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যেদিন জনগনের ১২ কেটি ভোটার নিরাপদে নিশ্চিন্তে একটি জবাবদিহি মূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। রাষ্ট্র সরকার শাসন প্রশাসনে মুক্তি যুদ্ধের মূলমন্ত্র সাম্য মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে।সর্বপরি এক গণতান্ত্রিক বৈষম্যহীন রাষ্ট্র সমাজ গড়তে পারবে তখনি জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের চুড়ান্ত সফলতা আসবে।

প্রিয় দেশবাসি জনতার ঐতিহাসিক চুড়ান্ত লক্ষে্য পৌছতে ‍যথাসম্ভব দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।জনগনের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।একটি বৈষম্যহীন গনতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি অবাধ সুষ্টু নির্বাচনের জন্য বিএনপিসহ বাংলাদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক দল সব রকমের সহযোগীতা করবে।

প্রিয় দেশবাসী এবার আপনাদের কাছে আমি একটি বিনিত আহবান রাখতে চাই।বিজয়ীদের কাছে পরাজিতরা নিরাপদে থাকলে বিজয়ের আনন্দ মহিমান্নিত হয়।সুতরাং বিজয়ের এই আনন্দঘন সময় রাহু মুক্তির এই ঐতিহাসিক মুহুর্ত শান্তভাবে উদযাপন করুন। অনুগ্রহ করে কেউ প্রতিশোধ কিংবা প্রতিহিংসা পরায়ণ হবেন না। কেউ নিজের হাতে দয়া করে আইন হাতে তুলে নিবেন না।অর্জিত বিজয় যাতে লক্ষ্যচ্যুত না হয় সেজন্য জনগনকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

৫২ ৭১ কিংবা ৯০ এর মত ছাত্র জনতা আবারও একটা বিজয় রচনা করেছে। প্রিয় দেশবাসী আবারও আপনাদের বিরচিত অভিনন্দন!আল্লাহ হাফেজ।