পুলিশ সদস্যকে গলা কেটে হত্যা-এসপি মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান
পুলিশ সদস্যকে গলা কেটে হত্যা-এসপি মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাইমুড়ী থানায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৪ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে তাৎক্ষণিক নিহত সবার পরিচয় জানাতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ।
সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সংঘর্ষের এসব ঘটনা ঘটে।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার দুপুরের দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সমর্থনকারীরা সোনাইমুড়ী বাইপাস এলাকায় জড়ো হন। এরপর তারা সেখানে আনন্দ উল্লাস করতে থাকেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আনন্দ মিছিল থেকে কয়েকজন সোনাইমুড়ী থানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। ওই সময় থানার ভেতর থেকে পুলিশ গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলে একজন নিহত হন।
এরপর উত্তেজিত জনতা সংঘবদ্ধ হয়ে থানা ঘেরাও করে হামলা-ভাঙচুর চালালে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন। পরবর্তীতে উত্তেজিত জনতা থানা ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় আরও শতাধিক লোক আহত হন। আহতদের মধ্যে ৩৪ জন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে এক পুলিশ সদস্য রয়েছেন বলেও জানা গেছে।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন জানান, সন্ধ্যার দিকে ৩৭ জনকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এরমধ্যে ৩ জনকে হাসপাতালে মৃত আনা হয়। বর্তমানে ৩৪ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আহতদের বেশির ভাগই সোনাইমুড়ীর বাসিন্দা। নিহত ৩ জনের বাড়িও সোনাইমুড়ীতে।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, এখন পর্যন্ত চার পুলিশ সদস্যের মরদেহ পাওয়া গেছে। ১৩ জন পুলিশ সদস্য সেখানে ছিলেন। এর মধ্যে ৪ জনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এর মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্যকে গলা কেটে হত্যা করে হয়েছে। ধোঁয়ায় ভবন ছেয়ে আছে। পুরো ভবন রিকভারি করার পরে প্রকৃত বিষয়টি বোঝা যাবে।
এসপি আসাদুজ্জামান আরও জানান, শুনছি সাধারণ মানুষ ৩ জন আবার কেউ বলছেন দুজন মারা গেছেন।
বেঁচে যাওয়া এক পুলিশের বরাত দিয়ে এসপি আরও বলেন, প্রথমে আন্দোলনকারীরা আক্রমণ করে পরে তারা তাদের বাঁচানোর জন্য উপরে ফাঁকা গুলি করেন পুলিশ সদস্যরা। নিহত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন—এএসআই মো. নাছির, এসআই মো. বাছির, কনস্টেবল মোশারফ ও গিয়াস। তবে গিয়াসের বিষয়টি এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নয়। ধোঁয়ার কারণে আমরা পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছি না। সোনাইমুড়ী থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিনের শরীরে ৫টি গুলি বিদ্ধ হয়েছে।
অপরদিকে, বিকেল পাঁচটার দিকে এক দল বিক্ষোভকারী আনন্দ মিছিল নিয়ে চাটখিল থানায় হামলা চালান। থানা ভবনের ভেতরে প্রায় প্রতিটি কক্ষে হামলা-ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করা হয়।