সেচ্ছাসেবক দল নেতা হত্যা মামলার আসামীকে নিয়ে বিএনপি নেতার জনসভা
কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সহ আইন-বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ জয়নাল আবেদীন মেসবাহ’র বক্তব্যে গোপালগঞ্জে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
তার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা প্রকাশ করে গোপালগঞ্জের নেতাকর্মীরা এ ঘটনায় আজ দুপুরে বিএনপির ঢাকায় কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বরাবর কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপিরসহ সকল সহযোগি সংগঠনের নেতারা ।
জানা যায়, সম্প্রতি আওয়ামী নেতা কর্মি ও কেন্দ্রীয় সেচ্ছাসেবক দল নেতা দিদার হত্যা মামলার ১১৬ নং আসামী সনেট ও আওয়ামী নেতা রাতইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আঞ্জুরুল ইসলাম আঞ্জু এবং গোপালগঞ্জ ১ আসনের সাবেক সাংসদ ও সাবেক মন্ত্রী মো.ফারুক খানের একান্ত কর্মিদের সাথে নিয়ে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ভাবড়াসুর ইউনিয়নের কালিনগর স্কুল মাঠে আয়োজিত এক জনসভায় স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর অপপ্রচার করেন মেসবাহ।
পাশাপাশি তিনি বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেলে গোপালগঞ্জ-১ আসনে নির্বাচন করার প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন।
তার এধরণের বক্তব্যের পর থেকে শুধু মুকসুদপুরেই নয় সারা গোপালগঞ্জে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং ওইদিনই রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোপালগঞ্জ শহরে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলসহ সহযোগী সংগঠনের নেতার্কীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গোপালগঞ্জ সদর থানা বিএনপি’র সভাপতি সিকদার শহিদুল ইসলাম লেনিন, জেলা যুবদল সভাপতি রিয়াজ উদ্দীন লিপটন, জেলা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সহ অনেকে।
বক্তারা কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সহ আইন-বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ জয়নাল আবেদীন মেসবাহ’র বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও সমালোচনা করেন এবং তার ওই বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে তাকে গোপালগঞ্জে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে বলেও তাকে সতর্ক করেন।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, গত ১৭ বছর ধরে মেসবাহ সাহেবকে এলাকায় দেখা যায়নি। তার কোন দলীয় কর্মকান্ডও পরিলক্ষিত হয়নি। হঠাৎ বসন্তের কোকিলের মতো তিনি এলাকায় এসে তিনি বিএনপি’র ব্যানারে আওয়ামী নেতা কর্মিদের নিয়ে জনসভা করেছেন।
ওই সভায় বিএনপির দলীয় স্থানীয় কোন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিল না। বরং যেসব লোকজন আওয়ামীলীগ আমলে আওয়ামীলীগের ক্ষমতা খাটিয়ে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন, সেসব লোকজন নিয়ে তিনি জনসভা করেছেন। দলের দুর্দিনে যে কোন বিপদে-আপদে আমরা কাছে পেয়েছি বিএনপি’র ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিমকে। বিগত ২৭ বছর ধরে আমাদের পাশে রয়েছেন।
২০০৮ এর নির্বাচনে গোপালগঞ্জ-১ আসনে বিএনপি’র তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। তার ধারাবাহিকতা তিনি আজও ধরে রেখেছেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। আমরা আরও বিশ্বাস করি, তার নেতৃত্বে গোপালগঞ্জ-১ আসনে বিএনপি আরও সুসংগঠিত হবে এবং সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।
সৈয়দ জয়নাল আবেদীন মেসবাহ’র বক্তব্যে গোপালগঞ্জে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে স্বীকার করে জেলা বিএনপি’র আহবায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান বলেছেন,
আজ দুপুরে আমরা বিএনপিসহ জেলার সকল সহযোগি সংগঠনের নেতারা ঢাকায় কেন্দ্রীয় পার্টি অফিসে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বরাবর সৈয়দ জয়নাল আবেদীন মেসবাহ’র বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি ।
তিনি ১৭ বছর ধরে গোপালগঞ্জ বিএনপিসহ দলীয় কোন নেতা কর্মির সাথে যোগাযোগ রাখেনি । এখন বসন্তের কোকিলের মত করে আওয়ামী নেতা কর্মি ও কেন্দ্রীয় সেচ্ছাসেবক দল নেতা দিদার হত্যা মামলার আসামীকে নিয়ে জন সভা করছেন। শুধু তাই নয় তিনি আওয়ামীলীগকে পূর্ন বাসনের চেষ্ঠা করছেন গোপালগঞ্জ বিএনপি তা মেনে নেবেনা ।
তিনি আরো বলেন, সৈয়দ জয়নাল আবেদীন মেসবাহ’র গোপালগঞ্জ বিএনপির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তা প্রমান না করতে পাললে আমরা তাকে গোপালগঞ্জে অবাঞ্চিত ঘোষনা করবো । তিনি আরো বলেন,
গোপালগঞ্জ-১ আসনে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের দলীয় কার্যক্রমগুলি মূলত ধরে রেখেছেন। বিএনপি’র ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম। তিনি ওই এলাকার সন্তান। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এলাকায় বিএনপি’র রাজনীতি ধরে রেখেছেন। এলাকার দলীয় নেতাকর্মীদেরকে সুসংগঠিত রাখতে তথা বিএনপি’র রাজনীতিতে তার বিকল্প এখনও নেই।
=======