চাকরি দেওয়ার নামে লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এভারগ্রীন সিকিউরিটি কোম্পানি
মোঃ জাকিরুল ইসলাম: রাজধানীর উত্তরা জোন আব্দুল্লাপুর এলাকায় দীর্ঘ দিন যাবত এভার গ্রীন সিকিউরিটি সার্ভিস কোম্পানি টি একাধিক মানুষকে চাকরি দেওয়ার নাম বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এমন অভিযোগ উঠেছে।
এভার গ্রীন সিকিউরিটি সার্ভিস কোম্পানির অফিস টি মূলত আব্দুল্লাপুর বাস স্টান্ড এর সংলগ্ন মা ভবন এর ৩য় তলায় অবস্থিত। ভবনটির ৩য় তলা সুন্দর ও সুসজ্জিত করে চাকরি দেওয়ার নামে যেন অপরাধের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছে। অনেক সময় এভার গ্রীন সিকিউরিটি সার্ভিস নিজস্ব লোগো ব্যবহার করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সোস্যাল মিডিয়ায়। এতে করে দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ চাকরির খোঁজে এভার গ্রীন সিকিউরিটি সার্ভিস কোম্পানির ফাঁদে পড়ে।
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে লেখা থাকে আকর্ষনীয় বেতন দুই ঈদে বোনাস সহ অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা। যা দেখে আকৃষ্ট হয় অল্প বয়সের তরুন তরুনীরা। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় এভার গ্রীন সিকিউরিটি সার্ভিস কোম্পানি। বিভিন্ন মানুষের সাথে ফেসবুক ম্যাসেনজারে অথবা মোবাইলে ম্যাসেজের মাধ্যমে কথা বলে কোন রকম অফিসে আনতে পারলে চাকুরি প্রার্থীর কাছ থেকে বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার নাম করে হাতিয়ে নিচ্ছে ১০ হতে ১৫ হাজার টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০ জন মানুষ চাকরির জন্য টাকা দিচ্ছে। রেজিষ্ট্রেশন, ফরম ফিলাপ, হোস্টেল খরচ ও পোশাক বাবদ এভাবে বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে এই সিকিউরিটি সার্ভিস কোম্পানিটি সাধারন মানুষের কাছ হতে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
এভার গ্রীন সিকিউরিটি সার্ভিস কোম্পানির মেনেজার গাউস ইসলাম গ্রাহকের সাথে টাকা লেনদেন করছেন।
এভার গ্রীন সিকিউরিটি সার্ভিসটির মূলহোতা মোঃ গাউস ইসলাম হলে এর সাথে আরো কয়েকজন জড়িত রয়েছে তবে সব কিছু ম্যানেজ করে গাউস। মুঠোফোনে এভার গ্রিন সিকিউরিটি সার্ভিস কম্পানির মূল মালিকের ব্যাপারে ম্যানেজার গাউসের সাথে কথা বললে তিনি প্রতিবেদককে জানান যে, কোম্পানির মূল মালিক হলো সাংবাদিক আরজু খান।
কোম্পানিতে রয়েছে একাধিক টিম লিডার। টিম লিডারের কাজগুলো হলো খাওয়া, থাকা ও ফেসবুক মেসেনজার ও মোবাইল মেসেজ করা গ্রাহকদের সাথে নিয়মিত খোজ খবর নেওয়া আবার অন্য টিম লিডার আরেক দায়িত্বে রয়েছে। এভাবে সবাইকে ভিন্ন ভিন্ন দায়িত্ব দিয়ে পরিচালনা করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি।
ভুক্তভোগী মাওলানা মুহাম্মদ মিরাজুল ইসলাম এভার গ্রীন সিকিুউরিটি সার্ভিস এর ফেসবুক পোস্ট দেখে মোবাইল ও মেসেনজারের মাধ্যমে এভার গ্রীন সিকিউরিটি সার্ভিস প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা তাকে ঢাকায় আসতে বলে এবং চাকুরির আশ্বাস দেয়। সিরাজগঞ্জ হতে ঢাকা আসে মিরাজুল ইসলাম। আব্দুল্লাপুর হতে রিসিপশন অফিসে নিয়ে যান প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীর একজন এরপর রিসিপশনে গিয়ে কিছুক্ষন বসে থাকেন এরপর তাকে রিসিপশনে ডাকা হয় এবং চাকরি বাবদ ৩৫০০ ঢাকা নেওয়া হয়। কিন্তু তারপরের দিন আবার ভালো পদে ও ভালো বেতন এর লোভ দেখিয়ে ১৫হাজার টাকা তার কাছ হতে নেওয়া হয়। এমন আরেক জন ভুক্তভোগী জামালপুর হতে আসা হাফেজ আহসান মাহমুদ একই ভাবে চাকুরি করার আসায় এভার গ্রীন সিকিউরিটি সার্ভিস কে ১৫০০ টাকা দিয়ে বিপদে পড়েন।
প্রতিষ্ঠানটির টিম লিডার হাফেজ আহসান মাহমুদ কে ভালো বেতনে ও সম্মান জনক পদে দায়িত্ব দেবার কথা বলে এই টাকা হাতিয়ে নেন। ভুক্তভোগী সিরাজগঞ্জ হতে আসা মাওলানা মোঃ মিরাজুল ইসলাম ও জামালপুর হতে আসা হাফেজ আহসান মাহমুদ দুই জনে এভার গ্রীন সিকিউরিটি সার্ভিস এর কাছে প্রতারনার স্বীকার হন।
এভাবে দেশের বিভিন্ন জেলা হতে আসা অল্প বয়সের তরুন তরুনীদের কাছ হতে এভার গ্রীন সিকিউরিটি সার্ভিসের কোম্পানী লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এভার গ্রীন সিকিউরিটি সার্ভিস কোম্পানিটির বিষয়ে রাজধানী উত্তরা পূর্ব থানার ওসি মোঃ মহিবুল্লাহ এর সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি সাংবাদিককে জানান, আমি এখন পর্যন্ত এভার গ্রীণ সিকিউরিটি সার্ভিস কোম্পানির ব্যাপারে তেমন কিছু জানি না, যদি কোন অভিযোগ পাই তবে তার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিব। অপরাধীরা যত বড় শক্তিশালী হক না কেন অবশ্যই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। আইনের চোখে সবাই সমান।
মানুষকে ধোকা দেওয়া ও প্রতারনার ফাঁদে ফেলা এভার গ্রীন সিকিউরিটি সার্ভিস কোম্পানিসহ ঢাকা শহরের অলিতে গলিতে যত রকম সরকার অনুমোদনহীন এমন সব সিকিরিউটি সার্ভিস কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ দেওয়া হোক বলে মনে করেন সচেতন সমাজের নাগরিক। দ্বিতীয় পর্বে থাকছে আরো বিস্তারিত।
==========