ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, সাংবাদিকদের উপর হামলা

রাজধানীতে ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের প্রাইম জেনারেল হাসপাতালে এ আজ মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, গতকাল রাতে হাতে ইনজুরি নিয়ে হাসপাতালটিতে আসেন রোগী। এরপর রহস্যজনকভাবে ঐ রোগীর মৃত্যু মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তির পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসা অবহেলার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের স্বজন হুমায়ুন আহমেদ জানান, গতকাল রাত ১০টায় হাতের ইনজুরি নিয়ে ওই রোগীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসা চলাকালীন রাত ৪টার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের মৃত্যুর খবর দেয়। এরপর তারা বিস্তারিত জানতে চাইলে কর্তব্যরত চিকিৎসকের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
পরিবারের দাবি, বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের সমঝোতার প্রস্তাব দেয় এবং ঘটনা মীমাংসার চেষ্টা করে। তবে, মৃতের স্বজনরা প্রকৃত তথ্য জানতে চাইলেও কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য দেয়নি।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে সঠিক তথ্য জানতে চাইলে তাদের তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। এমনকি সাংবাদিকদের হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশেও বাধা দেওয়া হয়।
এ সময় ভেতরে মৃত ব্যক্তির স্বজনদের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ আলোচনা চালিয়ে যায় এবং পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে।
এরপর, যখন মৃতদেহ এম্বুলেন্সে ওঠানো হচ্ছিল, তখন সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে হাসপাতালের ১০-১২ জন ব্যক্তি সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের মোবাইল ফোন ও মাইক্রফোন ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় কয়েকজন সাংবাদিক আহত হন। এরা হলেন-দৈনিক নিরপেক্ষ’র অনলাইন প্রতিবেদন মিছবাহ উদ্দিন, দৈনিক খোলা কাগজ প্রতিনিধি রেজাউল করিম সোহাগ, মাহবুব আলম, আজকের সংবাদ প্রতিনিধি পবিত্র চন্দ্র সরকার।
গণমাধ্যমকর্মী মিছবাহ উদ্দিন জানান, মৃত ব্যক্তির পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা সেখানে যাই। কিন্তু হাসপাতালের লোকজন ভিতরে যেতে দেয়নি। পরে লাশ বের করার সময় ছবি তুলতে গেলে হামলা চালায় এবং মোবাইল, ক্যামেরা ভাংচুর ও ছিনিয়ে নেয়। হামলার ভিডিও আমাদের কাছে রয়েছে। হাসপাতালের সিসি টিভিতেও থাকতে পারে। পরবর্তীতে সিনিয়রদের পরামর্শে থানায় অভিযোগ করেছি। আমরা হামলাকারীদের বিচার চাই।
এ ঘটনায় সাংবাদিকরা মোহাম্মদপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। মোহাম্মদপুর থানা অফিসার ইনচার্জ আলী ইফতেখার হাসান জানান, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।