হতে পারে আজ সেই মহিমান্বিত রজনী

আজ ২৭ মার্চ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর। এটি মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ ও মহিমান্বিত এক রাত। ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে, ২০ রমজানের পর যেকোনো বিজোড় রাত শবে কদর হতে পারে, তবে বহু আলেমের মতে, ২৬ রমজানের দিবাগত রাতেই এই পবিত্র রজনী আসে। তাই ২৭ রমজানকে ঘিরে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয় এবং সরকারিভাবে ছুটি পালিত হয়।
শবে কদরের ফজিলত ও তাৎপর্য
পবিত্র কোরআনে ‘আল-কদর’ নামে একটি সুরা রয়েছে, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শবে কদরের রাত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। এই রাতে পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হয়, যা ইসলামের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। নবী করিম হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, এই রাতে আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের সম্মান বৃদ্ধি করেন এবং তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করেন। তাই এই রাতকে ‘ভাগ্যরজনী’ হিসেবেও অভিহিত করা হয়।
রাতব্যাপী ইবাদত ও দোয়ার আয়োজন
শবে কদরের রাত ইবাদত-বন্দেগিতে কাটানো অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এই রাতে—
-নফল নামাজ আদায় করেন
-কোরআন তিলাওয়াত করেন
-জিকির-আজকার ও দোয়া করেন
-তওবা করে গুনাহ থেকে মুক্তি কামনা করেন
-স্বজনদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় কবর জিয়ারত করেন
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও মুসলমানরা শবে কদরের ফজিলত লাভের আশায় রাতভর ইবাদতে মশগুল থাকবেন।
রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ ও বিশেষ আয়োজন
পবিত্র শবে কদর উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে বিশেষ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। আজ বৃহস্পতিবার মাগরিবের নামাজের পর ‘পবিত্র শবে কদরের ফজিলত ও তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।
রমজান মাসে দেশের বিভিন্ন মসজিদে তারাবিহ নামাজে পবিত্র কোরআন খতম দেওয়া হয়। আজ শবে কদরের রাতে দেশের বহু মসজিদে খতমে তারাবিহ সম্পন্ন হবে।
আল্লাহর রহমত কামনায়
শবে কদর এমন একটি রাত, যখন আল্লাহর অশেষ রহমত ও ক্ষমার দরজা উন্মুক্ত থাকে। তাই সব সংকট থেকে মুক্তি ও কল্যাণের জন্য এই রাতে বেশি বেশি ইবাদত ও দোয়া করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আসুন, আমরা সবাই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় এই পবিত্র রাতে ইবাদত-বন্দেগিতে মনোনিবেশ করি এবং বিশ্বশান্তি ও কল্যাণের জন্য দোয়া করি।