চরম ভোগান্তিতে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকরা
এস আলমের জালিয়াতির কবল থেকে ছয়টি ব্যাংক মুক্ত হলেও চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকরা।
স্বয়ং রাজধানীর ঢাকা শহরে অবস্থিত ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের কয়েকটি শাখায় ঘুরে দেখা যায় গ্রাহকদের ভোগান্তি চরমে। গত ১লা সেপ্টেম্বর মোহাম্মদ আব্দুল হান্নানকে প্রদান করে ৭ সদস্যের একটি নতুন পর্ষদ ঘোষণা করেন বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে করে গ্রাহকদের মনে আশার সঞ্চার হলেও প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা। গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের শাখাটিতে গিয়ে দেখা যায় জনৈক ইব্রাহিম নামে এক ভদ্রলোক ৫ লক্ষ টাকার একটি চেক নিয়ে বসে আছেন। টাকা কি তুলতে পারছেন না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি রেগে মেগে বলেন পারলে কি বসে থাকতাম। তার মত এমন অনেকেই এক লক্ষ ২ লক্ষ ৩ লক্ষ টাকার চেক নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মিলছে না কাঙ্খিত টাকার দেখা।
বিষয়টি নিয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন ভাই বর্তমানে নগদ টাকার সংকট আছে। অচিরেই বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে।
এরপরে যদিও গন্তব্য হয় প্রতিবেদকের উত্তরা রাজলক্ষ্মী। সেখানে সাবেক ডিবি প্রধান হারুন সাহেবের ভবনের দ্বিতীয় তালায় অবস্থিত ব্যাংকটিতে গেলে শুনশান নীরবতা লক্ষ্য করা যায়। যদিও দুই একজন গ্রাহকের দেখা মিলে তারা কাঙ্ক্ষিত টাকা না পেয়ে ফেরত যাচ্ছে।
পরবর্তীতে যাওয়া হয় দক্ষিণ খানের আজমপুর কাঁচা বাজার শাখায়। সেখানে গিয়ে দেখা যায় লম্বা লাইন। জমার তো দেখাই নেই বরং উত্তোলনের এই বিশাল লাইনে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন লোককে বিভিন্ন রকমের কথা বলতে শোনা যায়। কেউ বলছে এরা পালাবে, আবার কেউ বলছে শালা গোরে ধর, আমাগো টাকা নিয়ে এস আলম পলাইছে ওর বাপের টাকা ছিল এগুলো। এমন অশ্লীল মন্তব্য শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা।রাবেয়া নামে এক মহিলাকে বলতে শোনা যায় ঐ টাকলুরে ( হেড ক্যাশিয়ার)ধর ।
পরবর্তীতে ব্যাংকের ম্যানেজারের কক্ষে প্রবেশ করলে তিনি বলেন ভাই চরম বেকায়দায় পড়েছি। আপনারা তো সাংবাদিক মানুষ এদেরকে একটু বোঝান। ব্যাংক তো আর দেউলিয়া হয়ে যায়নি বা পালিয়েও যায়নি। সাময়িক এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য দফায় দফায় আমাদের নতুন পর্ষদের সাথে মিটিং হচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যেই হয়তোবা এই অবস্থার উন্নতি হবে। বর্তমানে আমরা প্রত্যেককেই পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু গ্রাহকরা চাহিদার মত টাকা না পাওয়ায় বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করছে। কি আর করা চাকরি করলে অবশ্যই গ্রাহকদের বিভিন্ন রকমের কথা শুনতেই হবে।
কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর ডক্টর আহসান এইচ মনসুরের কথায় বুঝা যাচ্ছে যে তিনি কোনভাবেই বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এই দুর্বল ব্যাংকগুলোকে নগদ অর্থ দিয়ে সহায়তা করবেন না। এই কারণেই গ্রাহকদের মনে হতাশা বেশি। কিছু সচেতন নাগরিক মনে করে গভর্নর সাহেব দুর্বল ব্যাংকগুলোর গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে একটা বক্তব্য দেওয়া উচিত। তাহলে যদি অপ্রয়োজনীয় উত্তোলন ঠেকাতে পারেন। তার কথায় গ্রাহকদের আস্তা ফিরে আসতে পারে।
======