দূর্ঘটনা কমাতে আসছে পূর্ণাঙ্গ সড়ক আইন
দেশের সড়কে দুর্ঘটনায় মৃত্যুসহ ক্ষতি কমাতে পূর্ণাঙ্গ সড়ক আইন শিগগিরই সংসদে পাস করা হবে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ।
শনিবার (১১ মে) রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর দশম মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন তিনি। নিসচার সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনের সভাপতিত্বে মন্ত্রী সড়ক দুর্ঘটনায় পড়ে অনেক স্বপ্ন পূরণ করতে না পারার স্মৃতিচারণাও করেন।
এ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নতুন আইনে চালক-সহকারী, পরবিহন মালিক এবং ট্রান্সপোর্ট এজেন্সিসহ সংশ্লিষ্ট সবার দায়িত্ব বিশ্লেষণ করা হয়েছে। অর্থাৎ কে কোন দায়িত্বে থাকবেন এবং কোন ধরনের গাফিলতিতে কি ধরনের শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে, সব কিছুই পরিষ্কার করা হয়েছে।
নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমিও সড়ক দুর্ঘটনায় পড়েছিলাম। আমার অনেক আশা ছিল এটা হব, সেটা হব। কিন্তু রোড অ্যাকসিডেন্ট করে আমার সব আশাই স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল। এরপরই রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছিলেন বলে জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা এখন দেশে জাতীয় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। ২০২৩ সালে পাঁচ হাজার ৪৯৫ টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে আর নিহত হয়েছেন পাঁচ হাজার ২৪ জন। এই সমস্যা সমাধানে সার্বিক পদক্ষেপ থাকা প্রয়োজন। বিভিন্ন সংগঠন ও নিসচার দাবির ফলে সরকার ২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ঘোষণা করে ও পালন করে আসছে।
মন্ত্রী বলেন, সড়ক আইন সংসদে পাসের কাছাকাছি চলে এসেছে। এখানে চালক, সহযোগী, মালিক এবং বিভিন্ন ট্রান্সপোর্টের এজেন্সি সবারই তাদের দায়িত্বটা যথাযথ ভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। কার দায় কত কার কত শাস্তি হবে তাও বলা হয়েছে।
শহরে ২৫ ভাগ সড়ক থাকতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের দেশে কোনো শহরেই তা নেই। এর জন্য উড়ালসড়ক, ফ্লাইওভার হচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছয় দফা নির্দেশনাও দিয়েছেন। আমরা জেনেও আইন মানি না। এতে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ে।
মন্ত্রী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার কারণ আগে খতিয়ে দেখা উচিত। সবচেয়ে বড় কারণ সচেতনতার অভাব।
তিনি বলেন, অদক্ষ ও অসচেতন চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ফিটনেস বিহীন গাড়ি বাদ দেওয়া, চালকের মোবাইল ফোনে কথা বলা, অনিরাপদ ও ভাঙা সড়ক, ট্রাফিক আইন মেনে না চলা এমন অনেক কারণ রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আপনাদের কিছু দায়িত্ব আছে। আপনারও কারণ খুঁজে বের করেন। সেগুলো আমাদের দিন। আমরাও কাজ করছি। ঢাকাকে যানজট মুক্তসহ কীভাবে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে যাওয়া যায় তার চেষ্টা হচ্ছে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী বলেন, যখন করোনা হলো, একদিনে দুইজন, তিনজন চারজন করে মারা গিয়েছিল, সর্বোচ্চ একদিনে ১০০ থেকে ১২০ জন মারা গেছে। যখন ডেঙ্গু হচ্ছে, প্রতিদিন খবরের পাতায় আমরা সাবধান হই। আবার একটা সময়ে এই ডেঙ্গু থাকে না। কিন্তু, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে। ১০ এর নিচে কোনোদিন পাচ্ছি না। এ বছর সর্বোচ্চ ৩৭ জন একদিনে মারা গেছে।
সড়কে যাতায়াতের সময় সবাইকে সাবধান ও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।