শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩০ পূর্বাহ্ন

ষড়যন্ত্রকারীরা পোশাক শিল্পে বিশৃঙ্খলা তৈরিতে সচেষ্ট রয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক / ১৯ সময়
আপডেট: শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সিলেকশনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্ধারণ করা হয়েছিল। ব্যবসায়ীরা এমপি-মন্ত্রী হলে স্বার্থের দ্বন্দ্ব তৈরি হয় বলেছেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান। বিগত সময়ে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এসব সংগঠনে গণতান্ত্রিক চর্চা ছিল না।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ের এফডিসিতে শ্রম অধিকার ও পোশাক খাতে অস্থিরতা নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্প সম্পর্কে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশনের অপচেষ্টা করা হয়েছে। যাতে আমাদের বৈদেশিক রপ্তানি সংকুচিত হয়। এছাড়া ভুল তথ্য ছড়িয়ে একটি মহল শিল্প এলাকায় অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। তৈরি পোশাক খাতে অস্থিরতার পেছনে প্রতিবেশী দেশের ইন্ধন রয়েছে।

এ খাতে অস্থিরতা দীর্ঘায়িত হলে ক্রয়াদেশ অন্যদেশে চলে যেতে পারে। সে কারণে ষড়যন্ত্রকারীরা এদেশের পোশাক শিল্পে বিশৃঙ্খলা তৈরিতে সচেষ্ট রয়েছে। তবে সরকারের যথাযথ উদ্যোগে অসন্তোষ অনেকাংশে দূর হয়েছে। একই দেশে দুই ধরনের শ্রম আইন থাকতে পারে না। ইপিজেড এ শ্রমিক সংগঠন চালুর বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে।

এ বিষয়ে মালিক পক্ষসহ অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। গত ১৫ বছরে শ্রমিক কল্যাণ তহবিল নিয়ম মেনে পরিচালিত হয়নি। এ তহবিলের টাকা এমন কিছু ব্যাংকে রাখা হয়েছে যেসব ব্যাংক এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ তহবিলে এক হাজার কোটি টাকা রয়েছে। বর্তমান সরকার এ তহবিল পরিচালনায় সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, আমরা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিকে সমর্থন করি। শ্রমিকদের বেতন বৈষম্যসহ সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করাকে কোনোভাবেই গ্রহণ করি না। তবে শ্রমিকদের অযৌক্তিক দাবি-দাওয়ার নামে বিক্ষোভ আমরা কোনোভাবেই সমর্থন করি না। বাহিরাগতরা দলবলসহ কারখানায় প্রবেশ করে সাধারণ শ্রমিকদের বিক্ষোভে অংশ নিতে প্ররোচিত করাকে গ্রহণ করি না। আমরা মনে করি পোশাক শিল্পকে অস্থিতিশীল করে বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত এসব ব্যক্তিরা। এমনকি দেখা গেছে শ্রমিক আন্দোলনের উসকানিদাতাদের কেউ কেউ পোশাক শ্রমিক নেতা কিংবা পোশাক শ্রমিকও নয়।

অভিযোগ রয়েছে পার্শ্ববর্তী একটি দেশ এ অস্থিতিশীলতা তৈরি করে আমাদের এ পোশাক শিল্পের বাজারকে দখল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তাই মালিক শ্রমিক সবাই মিলে পোশাক শিল্পে অহেতুক শ্রমিক অসন্তোষ বন্ধে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ বের করবেন বলে আশা করছি। বিগত সরকারের সময়ে সরকার শ্রমিক সংগঠনের সমর্থন আদায়ে তথাকথিত কিছু ডামি শ্রমিক সংগঠনকে নিবন্ধন দিয়েছিল তৎকালীন সরকার। এসব শ্রমিক সংগঠনের নিবন্ধন যথাযথ নিয়মে হয়েছে কি না তা অনুসন্ধান করা জরুরি। সম্প্রতি পোশাক খাতে অস্থিরতা তৈরির পিছনে রাজনৈতিক স্বার্থে এসব ইয়েলো ট্রেড ইউনিয়ন কাজ করছে কিনা সেটিও অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

তবে দেশি-বিদেশি ইন্ধন ছাড়াও শ্রমিকদের বেতন বৈষম্য, কাজের অনিশ্চয়তা, কিছু কারখানা মালিকের অনুপস্থিতি, ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অপর্যাপ্ততাসহ নানা কারণে পোশাক শিল্পে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে পোশাক শিল্পে প্রায় ৪০ লাখের বেশি কর্মী কাজ করছে। যাদের শ্রমে ঘামে এ শিল্পটি বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। তারা যদি ন্যূনতম বেতন না পায়, শোভন কর্ম পরিবেশ না থাকে, নিরাপদ কারখানা তৈরি করা না হয়, শ্রম অধিকার লঙ্ঘিত হয় ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা না থাকে তাহলে কারখানা মালিকদের সিআইপি-ভিআইপি মর্যাদাসহ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ম্লান হয়ে যাবে।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে “শ্রমিকের অধিকার অপেক্ষা রাজনৈতিক স্বার্থই পোশাক খাতে অস্থিরতা তৈরি করছে” শীর্ষক প্রস্তাবে প্রাইম ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে তেজগাঁও কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন সাংবাদিক সাইদুল ইসলাম, সাংবাদিক দৌলত আক্তার মালা, সাংবাদিক বাবু কামরুজ্জামান, সাংবাদিক রেফায়েত উল্লাহ মীরধা ও ড. এস এম মোর্শেদ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর