মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসীদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল: এম এ মালেক
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও লন্ডন বিএনপি সভাপতি এম এ মালেক বলেন, ১৭ বছর পর দেশের মাটিতে পা রাখলাম। আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। প্রবাসে বসে মা-ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। তাদের লাশ দেশে আনতে পারিনি।
আমার সিলেট সুরমা উপজেলার বাড়ী থেকে টয়লেটের কমট পর্যন্ত তারা নিয়ে গেছে। আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। তবুও আমাকে দমাতে পারেনি। আপনারা জানেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রধানমন্ত্রী আমাকে লন্ডনে চায়ের দাওয়াত দিয়েছিল, আমি প্রত্যাখ্যান করেছি। খুনী হাসিনা আমার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বছরের পর বছর কারাগারে রেখেছে। আমার নেতা তারেক রহমানকে প্রবাসে থাকতে বাধ্য করেছে। তার সাথে কিসের চায়ের নিমন্ত্রন।
গত ১৭ বছর এম ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, সুমনসহ প্রায় ৬ শতাধিক বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে গুম করেছে। স্বাধীন বাংলাদেশের দুই মাসের অধিক সময় পার হয়ে গেল এখনও কেউ ফিরে আসেনি কেন? আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তিনি সারা পৃথিবীতে অত্যন্ত সম্মানিত একজন ব্যক্তি। তার হাতে দেশ ও জাতি নিরাপদ।
তিনি অতি দ্রুত সংস্কার শেষ করে দেশে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। তিনি বলেন, আপনাদের নেতা আমার নেতা তারেক রহমান সকল আইনী ব্যবস্থার মাধ্যমে অচিরেই বাংলাদেশে আগমন করবেন। আমি সত্যিই অভিভূত যখন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লক্ষ লক্ষ মানুষ আমাকে স্বাগত জানাতে গিয়েছে। আমার সাথে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়েছে তাদেরকে এবং বাংলাদেশের ও আন্তর্জাতিক সকল গণমাধ্যমকে আমি আমার পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার বাড়ীতে যখন আগুন লাগিয়েছে তখন আমার কেয়ারটেকার সেই ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছে, সেই বিচার আজও হয়নি। আজও সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর-রুনি হত্যার বিচার হয়নি। বাংলাদেশের জুলাই অভ্যুত্থানে যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা এদেশের মাটিতে পা রাখতে পেরেছি তাদেরকে হৃদয় দিয়ে দোয়া করছি, আল্লাহ যেন তাদেরকে জান্নাত দান করেন। তিনি আরো বলেন, যারা পঙ্গু রয়েছে তাদের পাশে দাড়ান, নির্বাচনের সময় কোটি কোটি টাকা খরচ করেন অথচ যাদের জন্য নতুন বাংলাদেশ পেলেন তারা পঙ্গুত্ব বরণ করে মানবেতর জীবন-যাপন করছে তাদেরকে দেখবেন না, নতুন নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রী হবেন এটি জাতি কখনও মেনে নেবে না।
তিনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করেন। এসময় বিএনপি নেতাকর্মীরা স্লোগানমুখর তাকে স্বাগত জানান। ১৪ অক্টোবর দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গুম হওয়া এম ইলিয়াস আলীর সহধর্মীনি বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টামন্ডলির সদস্য রুশদীর লুনা, বিএনপির সহ সম্পাদক নিলুফার চৌধুরী মনি, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য রফিক শিকদার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক, সাবেক কমিশনার নবীউল্লা নবী, জাতীয় মানবাধিকার সমিতি চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা, কাজী খায়রুজামান শিপন, শিক্ষাবিদ ড. ফারদিন ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা নিজাম উদ্দিন দরবেশ প্রমূখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাপ্তাহিক জয়যাত্রা পত্রিকার প্রধান সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু ও এম এ মালিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন কমিটির এম জাকারিয়া মাহমুদ।
উল্লেখ্য ১০ বছর আগে জাতীয় প্রেসক্লাবে লন্ডন বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক এর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত নাগরিক মুভমেন্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ সভা তার অনুপস্থিতিতে তৎকালীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদ এর উপস্থিতিতে এবং মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসার নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
========