সাত দেশের নাগরিকদের লেবানন ছাড়ার নির্দেশ
৭টি দেশ ও তাদের নাগরিকদের লেবানন ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে লেবানন সরকার। ইসরায়েল-হেজবুল্লাহ’র মধ্যে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জর্ডান, রাশিয়া, আয়ারল্যান্ডসহ আরও ৫টি দেশ তাদের নাগরিকদের লেবাননে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবাননে অবস্থানরত সৌদি নাগরিকদের অবিলম্বে দেশটি ছাড়তে বলা হয়েছে।বৈরুতে সৌদি দূতাবাস শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সৌদি নাগরিকদের যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলা হচ্ছে এবং অবিলম্বে লেবাননের ভূখণ্ড ত্যাগ করার আহ্বান জানানো হচ্ছে
গত ২২ জুন নিজ দেশের নাগরিকদের লেবানন ভ্রমণ এড়াতে এবং ‘আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে’ দেশটির অভ্যন্তরে থাকা ব্যক্তিদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে কুয়েত।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির এ সতর্কতা জারির পরই একে একে বিভিন্ন দেশ লেবাননে অবস্থান ও ভ্রমণ বিষয়ে সতর্কতা ও নির্দেশনা দিতে থাকে।
নিজেদের নাগরিকদের লেবানন ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত লেবানন ভ্রমণ থেকে তাদের বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। কারণ লেবানন সীমান্তে হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের উত্তেজনা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।
লেবাননে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের লেবাননের দক্ষিণ, সিরিয়ার সীমান্ত ও শরণার্থী ক্যাম্পের কাছাকাছি যেতে নিষেধ করা হয়েছে।লেবানন ভ্রমণ করার ক্ষেত্রে নাগরিকদের সর্বোচ্চ বিবেচনার কথা আমরা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। বিশেষ করেগত ২৮ জুন (শুক্রবার) নিরাপত্তা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে অস্ট্রেলিয়া তার নাগরিকদের লেবাননে ভ্রমণ না করতে পরামর্শ দেয়। লেবাননে অবস্থানরত অস্ট্রেলিয়ানদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে চলে যাওয়ার আহ্বান জানান অস্ট্রেলীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং।
একইদিন জর্দান তার নাগরিকদের লেবাননে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেয়।
লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে নিজ দেশের নাগরিকদের লেবানন ছেড়ে চলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কানাডিয়ান সরকার।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘দেশে এবং বিদেশে কানাডিয়ানদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষাই কানাডার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। ’
লেবাননে অবস্থান ও ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে ইউরোপের দেশ জার্মানিও। নিজ দেশের নাগরিকদের দেশটি ছেড়ে চলে যেতে বলে জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও একটি ভ্রমণ সতর্কতা জারি করে বলেছেন, ‘ইসরায়েল ও লেবাননের সীমান্তে পরিস্থিতি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ। ’
নিজ দেশের নাগরিকদের লেবাননে ভ্রমণে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ইউরোপের আরেক দেশ নেদারল্যান্ডস। একইসঙ্গে যারা সেখানে বসবাস করেন তাদের বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালু থাকা অবস্থায়ই দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ডাচ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ আহ্বান জানায়।
লেবানন ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছে উত্তর মেসিডোনিয়াও। রোববার তার নাগরিকদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশটি ছেড়ে চলে যেতে বলেছে।
গত ২৬ জুন (বুধবার) নিজ দেশের নাগরিকদের লেবাননে ভ্রমণ না করতে কঠোরভাবে নির্দেশ দেয় যুক্তরাজ্য।
দেশটির ফরেন, কমনওয়েলথ এবং ডেভেলপমেন্ট অফিস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইসরায়েল এবং অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলের মধ্যে সংঘর্ষের ঝুঁকির কারণে এফসিডিও লেবাননে সকল ধরনের ভ্রমণ এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দিচ্ছে। ’
লেবান ছাড়ার নিদের্শনা দিয়ে রাশিয়া নিজ দেশের নাগরিকদের বলেছে, পরিস্থিতি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত দেশটিতে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকতে।
লেবাননে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার রুদাকভ রুশ নাগরিকদের অপেক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, কূটনৈতিক মিশন স্বাভাবিকভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এবং দূতাবাসের কর্মচারীদের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
এই তালিকায় রয়েছে আয়ারল্যান্ডও। লেবাননের নির্দিষ্ট এলাকায় ভ্রমণ না করতে পরামর্শ দিয়েছে আইরিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং দেশটিতে অবস্থানরত আইরিশ নাগরিকদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানিয়েছে তারা।