ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সামাজিক সুরক্ষার লক্ষ্যে পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত
সমতলের প্রান্তিক, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও দলিত জনগোষ্ঠির সামাজিক সুরক্ষা এবং অধিকার সহজলভ্য করার লক্ষ্যে রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে অধিপরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
(১২ ডিসেম্বর) রংপুর পর্যটন মটেলের সভাকক্ষে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা হেকস এর আয়োজনে অধিপরামর্শ সভায় রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলার ২১টি প্লাটফর্মের প্রান্তিক, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও দলিত জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি, অ্যাডভোকেসি প্লাটফর্মের প্রতিনিধি এবং সাংবাদিকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
অধিপরামর্শ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার এনডিসি মো. শহিদুল ইসলাম। মূখ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পুলিশ রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম। হেকস কান্ট্রি অফিস বাংলাদেশ এর জেন্ডার ডাইভারসিটি এন্ড এডভোকেসীর পার্টনারশিপ ম্যানেজার এন্ড সিনিয়র প্রোগ্রাম এডভাইজার সাইবুন নেসা’র সভাপতিত্বে অধিপরামর্শ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার রংপুর বিভাগীয় পরিচালক মো. আবু জাফর (যুগ্মসচিব), অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মো. আসাদুজ্জামান, বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের পরিচালক মোছা. জিলুফা সুলতানা (উপসচিব), দিনাজপুর জেলা অ্যাডভোকেসি প্লাটফর্মের সভাপতি চিত্ত ঘোষ, রংপুর জেলা অ্যাডভোকেসি প্লাটফর্মের সাধারণ সম্পাদক পার্থ বোস। হেকস রংপুর আঞ্চলিক অফিসের টেকনিক্যাল অফিসার (রাইটস্ এন্ড এনটাইটেলমেন্ট) পাপন কুমার সরকারের সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন রংপুর জেলা অ্যাডভোকেসি প্লাটফর্মের উপদেষ্টা ফখরুল আলম বেঞ্জু, ককাস সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি সুশান্ত ভৌমিক, দলিত সম্প্রদায়ের এ্যাডভোকেট মনিলাল দাস, ডা. সামান্তা ঘোষ, ঠাকুরগাঁও অ্যাডভোকেসি প্লাটফর্ম এর সভাপতি আবু তোরাব মানিক, শ্যামল হেমরম ও ডা. তানিয়া প্রমুখ।
উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন দিনাজপুরের আলবেনুস টুডু, রংলাল বাসফোর, এডওয়ার্ড হেমরম, ঠাকুরগাঁওয়ের বুধ হাসদা, বিষরাম মুরমু, রংপুর মিঠাপুকুরের বাবুলাল মার্ডি, বদরগঞ্জের শ্যামল টুডু, লালমনিরহাটের ভুগলু বাসফোর, কুড়িগ্রামের সবরি বালা প্রমুখ। এর আগে সভায় রংপুর বিভাগের প্রান্তিক, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও দলিত জনগোষ্ঠীর সমস্যা ও সম্ভাবনা এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও দলিত জনগোষ্ঠীর সামাজিক সুরক্ষা বিষয়ক তথ্য ও জরিপ কার্যক্রম উপর বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়। ধারনারপত্র যৌথভাবে পাঠ করেন জুথি রানী ও ছবি রানী বাসফোর। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. শহিদুল ইসলাম (এনডিসি) বলেন, কোন প্রকার বৈষম্য করা যাবে না। মনে রাখত হবে প্রতিদিন সকালে নতুন সুর্যোদয়ের সাথে নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি হচ্ছে। আর নতুন বাংলাদেশে বৈষম্যের কোন ঠাই নাই। ‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’। তিনি বলেন, খাস জমি বরাদ্দের নীতিমালা অনুযায়ী পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও দলিত জনগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ করা হবে। তিনি বলেন, সংবিধান কিন্তু কাউকে বিভেদ তৈরি করে না। আইনের ভিত্তিতে সবাই সমান। আমরা যে যার অবস্থায় রয়েছি তা নিজ নিজ যোগ্যতায় রয়েছি। তার আগে আমরা সবাই মানুষ। তবে যোগ্যতায় এগিয়ে যেতে হবে। এজন্য ছলে মেয়েদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী করে তুলতে হবে। এছাড়া প্রান্তিক, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও দলিত জনগোষ্ঠীর সামাজিক সুরক্ষা ও অধিকার সহজলভ্য করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা এবং পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য প্রতিশ্রুতি ব্যাক্ত করেন।
মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে ডিআইজি আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি জন্ম সূত্রে এদেশের নাগরিক। আমরা আমাদের অধিকার চাই, রাষ্ট্র সেটা দেবে। সংবিধানের আলোকে আমরা সবাই সমান। দলিত, ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী এসব জাত পরিচয়ে বৈষম্য করা যাবে না। সভাপতির বক্তব্যে সাইবুন নেসা বলেন, আমরা মানবাধিকার সংরক্ষনে কাজ করি। মানুষের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তোলা, হাতে কলমে কাজ শেখার জন্য আমরা অংশীদার হিসেবে কাজ করি।