সিরাজদিখানে পুলিশের উপর হামলা!আটক-১১
সিরাজদিখানে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় ৩৪ জনকে আসামী করে মামলা করেছে সিরাজদিখান থানা পুলিশ।
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতাকে কেন্দ্র করে আব্দুল বারেক চেয়ারম্যান গ্রুপ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সারোয়ার কবীর সমর্থক আশরাফ আলী গ্রুপের মধ্যে মারপিটের সময় পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় আটক ১১ জনসহ ৩৪ জনকে এজাহার নামীয় আসামীসহ অজ্ঞাতনামা ৫০/৬০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে সিরাজদিখান থানার এসআই মোঃ লোকমান হোসেন বাদী হয়ে ঘটনাস্থল থেকে আটক কেয়াইন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল বারেককে প্রধান আসামী করে গ্রেফতারকৃত ১১জনসহ ৩৪ জনকে এজাহার নামীয় আসামী ও ৫০/৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৮।
পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কেয়াইন ইউনিয়নের বড়বর্তা (বেপারীহাটি) গ্রামের মৃত হাসেম বেপারীর ছেলে আব্দুল বারেক (৭০),কুচিয়ামোড়া (শেখ বাড়ী) গ্রামের মৃত কামালউদ্দিনের ছেলে ইস্রাফিল শেখ (৫০), একই গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে তৌফিক আহম্মেদ তুষার (২৬), বড়বর্তা (জাহাঙ্গীরনগর) গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে ফরহাদ হোসেন (৩৯), কুচিয়ামোড়া (মাষ্টার বাড়ী) গ্রামের মোঃ ইস্রাফিল শেখের ছেলে মোঃ সৈকত হোসেন (২৭), বড়বর্তা (জাহাঙ্গীরনগর শেখ বাড়ী) গ্রামের মোঃ আব্দুর রহমানের ছেলে আমিনুল ইসলাম (৩০),ইছাপুরা (সরদার বাড়ী কামিল মাদ্রাসার পাশে) গ্রামের মৃত কোরবান আলীর ছেলে মোঃ আসাদুজ্জামান (৪৫), কুচিয়ামোড়া (বেপারী বাড়ী) গ্রামের মৃত এছাক বেপারীর ছেলে আব্দুল হাকিম (৬০), কুচিয়ামোড়া গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে রেজাউল বারী ওরফে রাজু (৩৫), হাজী আব্দুল আহাদ ভুইয়ার ছেলে তায়েফ ভূঁইয়া (৩০) ও মৃত জাফর আহমেদের ছেলে মোঃ রুবেল (৪০)।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের কুচয়ামোড়া কলেজ মাঠ এলাকার হাউজিং ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান আশরাফ আলী গ্রুপ ও সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক গ্রুপ মারামারী ও সংর্ঘষে লিপ্ত হওয়ার উদ্দেশ্যে সমবেত হয়ে মুখোমুখি অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে সিরাজদিখান থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে আব্দুল বারেক চেয়ারম্যানের পক্ষকে লাঠিসোটাসহ দেখে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টাকালে ইট পাটকেল,কাঠের ডাসা, লোহার রডসহ দেশীয় মারাত্মক অস্ত্রেস্বস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ১নং আসামী আব্দুল বারেকের হুকুমে সকল আসামীগণ পুলিশের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপসহ হত্যার উদ্দেশ্যে ১ নং আসামী আব্দুল বারেক ও ২নং আসামী ইস্রাফিল শেখ কাঠের মোটা লাঠি দিয়ে সিরাজদিখান থানার ওসি মোঃ মোজাহিদুল ইসলাম সুমনকে মাথায় আঘাত করে গুরুতর ফাটা রক্তাক্ত জখম করে।
এসময় অন্যান্য আসামীদের পারপিটে সিরাজদিখান থানার এসআই মোঃ মনোয়ার হোসেন, এএসআই মোঃ কামরুল হাসান, এএসআই মোঃ শামছুর রহমান, কনস্টেবল মোঃ আল আমিন হাওলাদার, কনস্টেবল হযরত আলী, কনস্টেবল (ড্রাইভ্রার) মোঃ মিজানুর রহমান নিলাফুলা জখমসহ হাড়ভাঙা জখম প্রাপ্ত হন।
পুলিশের উপর হামলার সময় আসামীগণ পুলিশের ব্যবহৃত সরকারী গাড়ী ঢাকা মেট্রো-ঠ-১৪-৩৯৬৭ ভাংচুর করে অনুমান ১ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্রীনগর সার্কেল মোঃ তোফায়েল হোসেন সরকার ডিবি টিম সহ অতিরিক্ত অফিসার ও ফোর্স ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে ঘটনাস্থল থেকে ১১ জনকে আটকসহ লাঠিচার্জ করে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার পাশাপাশি আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।
এসময় ৪ টি এসএস পাইপ, ৫ টি লোহার রড,৯টি কাঠের লাঠি জব্দ তালিকা মূলে জব্দ করে পুলিশ। পরে সিরাজদিখান থানার এসআই মোঃ লোকমান হোসেন বাদী হয়ে একই উদ্দেশ্যে মারাত্মক অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বে-আইনী জনতাবন্ধে পুলিশের সরকারী কাজে বাধাদান সহ দাঙ্গা অনুষ্ঠান, অপরাধ মূলক বল প্রয়োগ ও পথরোধ করিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করতঃ সাধারন ও গুরুতর জখম, ভাংচুর করিয়া ক্ষতিসাধন ও জীবন নাশের হুমকী ও হুকুম প্রদান করিয়া ১৮৬০ সালের পেনাল কোডের ১৪৩/১৪৭/১৪৮/১৪৯/১৮৬/৩৩২/৩৩৩/৩০৭/৩৪১/৩৫৩/৪২৭/৫০৬(২)/১১৪ ধারায় আটক ১১ জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে ৩৪ জনকে এজাহার নামীয় আসামীসহ ৫০/৬০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।মঙ্গলবার সকালে গ্রেফতাকৃত ১১ জনকে প্রয়োজনীয় পুলিশ প্রহরায় আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ।
হামলায় ৯ জন পুলিশ সদস্য আহত হওয়া এবং ১১ জনকে গ্রেপ্তার করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় গতকাল রাতে উপপরিদর্শক (এসআই) লোকমান বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে গ্রেপ্তার আসামীদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
==========