জাতীয় বেতন কমিশন গঠন: ছয় মাসের মধ্যে সুপারিশ চূড়ান্ত করতে নির্দেশ

রোববার (২৭ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা ১৫ অনুযায়ী এই কমিশন গঠন করা হয়েছে।
কমিশনকে প্রথম সভার তারিখ থেকে ছয় মাসের মধ্যে সরকারের কাছে প্রস্তাবিত বেতন কাঠামোসহ সুপারিশমালা জমা দিতে হবে।
কমিশনের নেতৃত্ব ও সদস্যগণ
কমিশনের সভাপতি হিসেবে রয়েছেন সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খান।
পূর্ণকালীন সদস্য হিসেবে রয়েছেন:
-
সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ আলী খান
-
সাবেক হিসাব মহানিয়ন্ত্রক মো. মোসলেম উদ্দীন
-
সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. ফজলুল করিম
খণ্ডকালীন সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন প্রশাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আর্থিক খাতসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ও পেশাগত সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
এছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে মনোনীত একজন সচিব বা অতিরিক্ত সচিব কমিশনের সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। কমিশন প্রয়োজনে খণ্ডকালীন সদস্য কো-অপ্ট করারও সুযোগ রাখবে।
কমিশনের কার্যপরিধি ও সুপারিশের বিষয়বস্তু
প্রজ্ঞাপনে কমিশনের কাজের পরিধি ও সুপারিশের বিষয়বস্তু নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
✅ সময়োপযোগী ও যুক্তিসংগত বেতন কাঠামো নির্ধারণ
✅ বিশেষায়িত পেশাজীবীদের জন্য আলাদা বেতন কাঠামো
✅ বেতন-ভাতার উপর আরোপযোগ্য আয়কর কাঠামো পর্যালোচনা
✅ বেতন-বহির্ভূত সুযোগ-সুবিধা যেমন:
-
বাড়িভাড়া, চিকিৎসা, যাতায়াত, আপ্যায়ন
-
প্রেষণ, কার্যভার, উৎসব ভাতা
-
শ্রান্তি বিনোদন ভাতা
✅ মূল্যস্ফীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে বেতন সমন্বয়ের পদ্ধতি নির্ধারণ
✅ পেনশন ও অবসর সুবিধাসমূহের আধুনিকায়ন
✅ মেধা ও দক্ষতার ভিত্তিতে বেতন কাঠামোয় পার্থক্য নির্ধারণ
✅ সরকারি সেবার নগদায়ন ও রেশন সুবিধার যৌক্তিকীকরণ
✅ ইনক্রিমেন্ট বা উচ্চতর গ্রেডে অসংগতি দূরীকরণ
সুপারিশ তৈরিতে যেসব বিষয় বিবেচনায় থাকবে
-
ছয় সদস্যের একটি পরিবারের জীবনযাত্রার ব্যয়
-
শিশুদের শিক্ষা ও চিকিৎসা খরচ
-
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের পরিমাণ
-
প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা খাতে ব্যয়
-
সংশ্লিষ্ট সংস্থার আয়-ব্যয়ের অবস্থা
-
দারিদ্র্য নিরসন ও আত্মনির্ভরতার লক্ষ্যমাত্রা
-
প্রশাসনে মেধাবী নিয়োগ ও সেবার মান উন্নয়ন
সংশ্লিষ্ট মহলের প্রত্যাশা
নবগঠিত এই কমিশনের কাজ নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে। দীর্ঘদিন ধরেই তারা নতুন ও সময়োপযোগী বেতন কাঠামোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সরকারের সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে, তা সরকারি সেবার মান উন্নয়ন এবং দক্ষ কর্মী ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্লেষকদের মত