গাজায় ভঙ্গুর জনবিরতির মধ্যে নতুন হামলা, দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

আলজাজিরা, রয়টার্স ও বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অক্টোবরের শুরুতে কার্যকর হওয়া জনবিরতির পর গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ ও খান ইউনুস এলাকায় একাধিকবার বিমান হামলার ঘটনা ঘটে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, রাফাহ সীমান্তে তাদের দুই সেনা সদস্য নিহত হওয়ার পর “আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ” হিসেবে ওই হামলা চালানো হয়।
অন্যদিকে, গাজার প্রশাসন জানিয়েছে, জনবিরতি কার্যকর থাকা অবস্থায় ইসরায়েল অন্তত ৮০ বার আকাশ ও স্থল অভিযান চালিয়েছে। এতে ৯৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে তারা। হামাস বলেছে, “ইসরায়েলই প্রথম জনবিরতির শর্ত ভঙ্গ করেছে— সীমান্ত বন্ধ রেখে, ত্রাণ প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে ও আক্রমণ অব্যাহত রেখে।”
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, হামাস বন্দি বিনিময় চুক্তি ও নিরস্ত্রীকরণের শর্ত লঙ্ঘন করেছে এবং সীমান্তের ভেতরে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। তবে হামাসের জবাব, তারা এখনো জনবিরতি রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, কিন্তু ইসরায়েলের আগ্রাসন থামেনি।
জনবিরতির অংশ হিসেবে রাফাহ সীমান্ত খোলা রাখা, মানবিক ত্রাণ প্রবেশের সুযোগ এবং বন্দি বিনিময় প্রক্রিয়া চলমান রাখার কথা ছিল। কিন্তু সীমান্ত দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকায় খাদ্য ও ওষুধের সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই অবস্থা “ভঙ্গুর শান্তির সূক্ষ্ম ভারসাম্য”কে আরও দুর্বল করে দিয়েছে। জাতিসংঘ ও কাতার পরিস্থিতি শান্ত রাখার আহ্বান জানিয়েছে, তবে মাটিতে নতুন করে সহিংসতা শুরু হলে জনবিরতি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গাজা যুদ্ধবিরতির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে এক পর্যবেক্ষক বলেন,
“এটি আর কার্যকর যুদ্ধবিরতি নয়, বরং অবিশ্বাস ও ভয়ের মধ্যে টিকে থাকা এক অস্থায়ী বিরতি।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, উভয় পক্ষ যদি এখনই সহিংসতা বন্ধ না করে, তাহলে গাজায় আবারও পূর্ণমাত্রায় সংঘাত শুরু হতে পারে, যা মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
সূত্র: আলজাজিরা, রয়টার্স, বিবিসি, লে মোঁদ (২০ অক্টোবর ২০২৫)