রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন

বাবার উপর অভিযোগ এনে আত্মহত্যা

রিপোর্টার নাম: / ৪১ সময়
আপডেট: বুধবার, ১৯ জুন, ২০২৪
Oplus_131072

বাবার উপর অভিযোগ এনে ফেসবুকে লাইভ অত:পর গলায় ফাস দিয়ে গৃহবধুর আত্মাহত্যা। ফেসবুক লাইভে এসে কষ্টের কথা জানিয়ে রহিমা আক্তার (২৪) নামে এক গৃহবধূ ‘আত্মহত্যা’ করেছেন।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) ভোরে রাজশাহীর চারঘাট পৌর শহরের হলের মোড় এলাকার একটি ভাড়াবাড়িতে তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

রহিমার স্বামী সায়েম ইসলাম ওরফে সাগর একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন। তারা পুঠিয়া উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা। চারঘাট পৌর এলাকার ওই বাসায় তারা ভাড়া বাসায় থাকতেন। ‘আত্মহত্যা’র সময় তিনি বাড়িতে একাই ছিলেন।

জানা গেছে, ঈদের দিন স্বামীর সঙ্গে বাবার বাড়ি ও শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন রহিমা। ভালো লাগছিল না বলে স্বামী-সন্তানকে রেখে তিনি একাই ভাড়া বাসায় চলে আসেন এবং ভোররাতে ‘আত্মহত্যা’ করেন।

চারঘাট থানার ওসি সিদ্দিকুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, রহিমা আক্তারের বাবার সঙ্গে তার মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলে বাবা আরেকটি বিয়ে করেন। এতে রহিমা আক্তার একা হয়ে পড়েছিলেন। এ নিয়ে তিনি বিষণ্নতায় ভুগছিলেন। আগেও বেশ কয়েকবার তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।

ওসি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আজ ভোরে ফেসবুক লাইভে আসেন ওই গৃহবধূ। এ সময় তিনি তার দুঃখের কথাগুলো বলেন। মা-বাবাকে নিয়ে অনেক কথা বলেছেন।

লাইভ শেষে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন রহিমা। সকালে পুলিশ পাঠিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তার পরিবারের কাছে মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

পুলিশ জানায়, আত্মহত্যা করার আগে রহিমা আক্তার ২৩ মিনিট, ১২ মিনিট ও ৫ মিনিট সময়কালের ৩টি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন।

২৩ মিনিটের ভিডিওতে রহিমা বলেন, ‘কথা হইলো আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী কারা। প্রথমেই আমার বাবা ও ছোট (সৎ) মাকে বলি আমার প্রিয় মানুষটাকে (স্বামী) জেল, আইন-আদালতের পেছনে ঘুরাবা না। কারণ আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী তুমি (বাবা)। আজ যদি তুমি বিয়ে না করতে, আমার মাকে নিয়ে সংসার করতে তাহলে আমাকে নিয়ে এসব কথা বলার সাহস পেত না। জেল যদি কাউকে খাটতে হয় সে তোমার (বাবা)। সেটা একমাত্র তোমার। আর কারো না।’

রহিমা আরও বলেন, ‘আমার হাজবেন্ডকে বলছি, তোমার নামে যদি কেউ এলিগেশন দেয় যে, তোমার মানসিক টর্চারে আমি মারা গেছি- তুমি তার নামে মামলা দিবা। ওর নামে দিবা মামলা, কারণ আমার বাবা মা ভালো হইলে কেউ সাহস পাইতো।’

১২ মিনিট সময়কালের ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘আমি একটি বই লিখতে শুরু করেছিলাম। বইয়ের নাম রাখতে চেয়েছিলাম- সুইসাইড। বই লেখা শেষ না করতেই আমি নিজেই সুইসাইড হয়ে গেলাম। বাবা-মা খারাপ হলে কিন্তু সন্তানরা খারাপ হয় না। এসব কথা শুনতে শুনতে বোর হয়ে গেছি। জীবন দিয়ে প্রমাণ করে দিতে চাই।’

ফেসবুক লাইভে স্বামীর উদ্দেশে ওই নারী বলেন, ‘তুমি সন্তানের বাবা-মায়ের দায়িত্ব পালন করবে। আমি তোমাদের দুজনকে খুব ভালোবাসি। তোমার যখন চাকরি ছিল না, বেকার ছিলে, তখন আমি তোমাকে ছেড়ে যাইনি। এখন তোমার চাকরি হয়েছে। যে নতুন জীবনসঙ্গী হবে তাকে সময় দিও।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর