দেড় যুগেও হয়নি সড়ক সংস্কার! চরম দূর্ভোগে হাজারো মানুষ
দেড় যুগেও হয়নি সড়ক সংস্কার! চরম দূর্ভোগে হাজারো মানুষ।সাধারণ মানুষের শেষ ভরসা এখন মেয়র।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিখ্যাত সেই কবিতাটা মনে আছে? -“কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটলো কেউ কথা রাখেনি” তেএিশ বছর না কাটলেও এক যুগেরও বেশি সময় ধরে মানুষের দূর্বিষহ সময়ের সাক্ষী হয়ে আছে এক সময়ের যোবনের বয়স পেরিয়ে মৃত প্রায় রাস্তাটি। অথচ এবারও ২০২৩ নির্বাচনের অঙ্গিকার ছিলো এই ছোট রাস্তাটি সংস্কার করে দিবেন বলে ওয়াদা বদ্ধ করেছিলেন। কিন্তু কাউন্সিলর কথা রাখেননি।
বলছিলাম গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২৭ নং ওয়ার্ডের গনির টেকের একটি মৃত রাস্তার আত্ম কাহিনি। আর ২৭ নং ওয়ার্ডের যিনি কাউন্সিলর তিনি হলেন আলহাজ্ব মোঃ জাবেদ আলী জবে।
খালি চোখে দেখলে আপনি নিজেই বুজতে পারবেন না এই রাস্তা দিয়ে একসময় হাজার হাজার মানুষের চলাচল ছিলো। যদি আপনি হেঁটে প্রধান সংযোগ সড়কে উঠতে চান তবে কোমড় পর্যন্ত ডেবে যাবেন এটা নিশ্চিত। আর ছোট বাচ্চারা সম্পূর্ণ ডুবে যেতে পারে বলে আশংকা রয়েছে। কোথাও কোথাও এখন হয়ে গেছে ডোবা। রাস্তাটার দৈর্ঘ্য বেশি না হলেও ভোগান্তি পোহাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।
আশেপাশের বাড়িঘরের মানুষজন বেরুতে পোহাতে হচ্ছে চরম দূর্ভোগ। অসুস্থ হলে কোলে করে নিতে হচ্ছে মূল সড়কে। অল্প বৃষ্টিতেই সমস্ত রাস্তা সহ অনেক বাড়িতেই ময়লা পানি ডুকে যায়। এলাকাবাসী নিজেরাই কয়েকবার রাবিশ বালু সুড়কি ফেলে রাস্তা দিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করলেও সেটা অল্প বৃষ্টিতেই আবারও নস্ট হয়ে যাচ্ছে।
রাস্তার এমন বেহাল দশার জন্য গার্মেন্টস শ্রমিকদের অনেক খানি রাস্তা ঘুরে অফিসে যেতে হচ্ছে ফলে সময় ও হাজিরা দুই ক্ষতির মুখে পড়ছে।
সেই সাথে ডোবায় পরিনত হওয়াতে সাপ ও ডেঙ্গুর ভয় তো আছেই। এলাকাবাসীর অভিযোগ বর্তমানে রাসেল ভাইপার সর্বত্র ছরিয়ে পরেছে। এত বার জানানোর পরেও তারা এটা আমলে নিচ্ছে না। সাপের কামড়ে বা ডেঙ্গুতে কারো প্রান হানি হলে এর দায়ভার কি তারা নিবে? সবচেয়ে বড় সমস্যা তৈরি হয়েছে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায়। তাই আশেপাশের সমস্ত পচা ও দুর্গন্ধময় পানি চারপাশ ঘিরে আছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ গত কয়েক বছরেও এদিকে কাউন্সিলর আসেননি। নির্বাচনের সময় ভোট চাওয়া ছারা তিনি এই রাস্তা সংস্কারের বিষয়ে কোন আগ্রহ দেখাননি। এলাকাবাসী বেশ কয়েকবার কাউন্সিলরের সাথে যোগাযোগের একমাএ মাধ্যম রাস্তা নিয়ে কথা বলেও কাজ হয়নি।
রাস্তার সংস্কারের বিষয় নিয়ে ২৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সাথেও বেশ কয়েকবার সাক্ষাৎ করা হয়েছে । নির্বাচনের আগেও সাক্ষাৎ করলে নির্বাচন পরবর্তী সময় করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন কিন্তু পাশ করার পরে আবারো সাক্ষাৎ করলে এক শুক্রবার ফোন দিতে বলেন দেখবেন বলে। সেই দিন ফোন দিলে শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে আসেননি
সর্বশেষ ০৮-১০-২০২৩ তারিখে এলাকার সকলের মতামত নিয়ে সাংবাদিক এম এ হানিফ রানা মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান যদি সিটি করপোরেশনের লোকাল টেন্ডার না দেয় তাহলে তার পক্ষে সম্ভব নয়। ১০ টাকারও ক্ষমতা নেই বলে উল্লেখ করেন। প্রস্তাব রাখা হয়েছিলো আপাততঃ ব্যাক্তিগত ভাবে যদি কিছুটা রাস্তার সংস্কার করা যায় কিনা? জবাবে কাউন্সিলর জবে বলেন রাস্তা করতে কম হলেও ৫০ লক্ষ্য টাকা লাগবে বলে তিনি জানান।
এলাকাবাসীর বিস্তর অভিযোগ এই এলাকার কথিত কিছু ব্যাক্তির সার্থ হাসিলের জন্য কি রাস্তা দীর্ঘ রানিং ৩ বার ক্ষমতায় থাকার পরেও উন্নয়ন হয়নি?? এবারও তিনি পাশ করেছেন কিন্তু কথা রাখেননি। অনেক আগে ইটের রাস্তা থাকলেও রাতের অন্ধকারে কে বা কারা এখান ইটগুলো খুলে নিয়ে গেছে। তাই আরো বিপদজনক হয়ে গেছে। তাছারা একটি বাড়ির জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রধান রাস্তায় বাশ দিয়ে বেড়া দেয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। ২৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হান্নু এসে সেই বেড়া সরিয়ে দেন।
১৯ মে ২০২৪ তারিখে ২৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ্ব হান্নান মিয়া হান্নুকে ফোন দেয়া হয়। যেহুতে ২৬ নং ওয়ার্ডের কিছুটা অংশ এই রাস্তায় পরেছে। তিনি লোক পাঠান এবং রাস্তা মেপে নিয়ে যান। এবং বলেন মাননীয় মেয়র মহোদয়ের নজরে আনবেন। এবং যদি টেন্ডার হয় তবে করে দিবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
এই রাস্তাটি ২৬ ও ২৭ নং ওয়ার্ডের মাঝামাঝি হওয়াতে দুই কাউন্সিলরের কাছেই এলাকাবাসী গিয়েছেন। যেনো রাস্তাটি ড্রেনেজ ব্যবস্হাপনা সহ সম্পূর্ণ করা হয়।
এখন সকলেই মনে করছেন একমাএ গাজীপুরের ” আম্মাজান ” খ্যাত বর্তমান মেয়র জায়েদা খাতুন ও সাবেক মেয়র এবং বর্তমান মাননীয় মেয়রের প্রধান উপদেষ্টা আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলমের সু দৃষ্টিতে আসলেই কেবল পরিবর্তন সম্ভব। এলাকাবাসী সুস্পষ্ট ধারনা যদি গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম যদি ক্ষমতায় থাকতেন তাহলে অনেক আগেই এই রাস্তাটি হয়ে যেতো। তাই সকলের একটাই চাওয়া, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সম্মানিত মেয়রের সু দৃষ্টিতে আসলে তবেই হয়তো হাজারো মানুষের কষ্টের লাঘব ঘটবে বলে মনে করেন এলাকাবাসী।