কেমন কাটলো পুলিশের ঈদ ২০২৫

ঈদুল আযহা ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার সুমাইয়া নূর প্রভা
প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২৫, ১০ঃ ৩৬ এএম
২০২৫ সালের পবিত্র ঈদুল আজহা, দেশের অন্যান্য মানুষের মতোই পুলিশ সদস্যদের জন্য ছিল এক বিশেষ দিন। তবে তাঁদের ঈদ উদ্যাপন ছিল দায়িত্ব, ত্যাগ এবং কর্তব্যবোধে পূর্ণ। যখন দেশের অধিকাংশ মানুষ পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে শহর ছেড়ে গ্রামে কিংবা নিজ নিজ বাড়িতে গিয়েছেন, তখন পুলিশের একটি বড় অংশ দায়িত্ব পালনের জন্য থেকে গেছেন কর্মস্থলে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহর, হাইওয়ে, কোরবানির হাট ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ছিলেন তাঁরা।
ঢাকার বিজয় সরণি মোড়ের মতো ব্যস্ত এলাকায় ঈদের দিনেও দেখা গেছে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে। তেজগাঁও ট্রাফিক জোনে কর্মরত পুলিশ সদস্য মেহেদি হাসান নজরকে বলেন, “ঈদ হোক কিংবা অন্য কোনো উৎসব—আমাদের দায়িত্ব পালনে ছাড় নেই। রাস্তায় মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে, সেটিই আমাদের মূল লক্ষ্য।” তিনি জানান, পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ কাটানোর ইচ্ছে থাকলেও কর্তব্যের কারণে সেটি আর হয়ে ওঠে না। তবে তিনি মনে করেন, মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই তাঁদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব ও গর্বের বিষয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ঈদ উপলক্ষে সারা দেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। কোরবানির হাটে ভিড়, পশুবাহী যানবাহনের নিরাপত্তা, শহরের প্রবেশ ও বহির্গমনপথে যানজট নিরসন, চুরি-ডাকাতি প্রতিরোধসহ নানা দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন পুলিশ সদস্যরা। রাজধানীর পাশাপাশি চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, বরিশালসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরেও পুলিশ সদস্যরা ছিলেন সর্বোচ্চ সতর্কতায়। হাইওয়ে পুলিশ, রেলওয়ে পুলিশ ও নৌ পুলিশও কাজ করেছেন নিরলসভাবে।
ঈদের দিন থানা কিংবা ব্যারাকে অনেক পুলিশ সদস্যের জন্য সীমিত পরিসরে আয়োজন করা হয় খাওয়া-দাওয়ার ও মিলনমেলার। যদিও সেটা পরিবারের ভালোবাসার বিকল্প নয়, তারপরও নিজেদের মধ্যে আনন্দ ভাগ করে নেন তাঁরা। কোনো কোনো থানায় প্রার্থনার জন্য ঈদের জামাতের ব্যবস্থা করা হয়, যাতে কর্তব্যরত সদস্যরা একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।
পুলিশের একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, তাঁরা গর্ববোধ করেন এমন একটি পেশায় থাকতে পেরে, যেখানে দায়িত্ব পালনই সবচেয়ে বড় আনন্দ। তাঁদের চোখে ঈদের প্রকৃত আনন্দ তখনই আসে, যখন দেশে শান্তিপূর্ণভাবে মানুষ ঈদ উদ্যাপন করতে পারে, যখন কোনো বড় দুর্ঘটনা বা বিশৃঙ্খলা ছাড়াই উৎসব শেষ হয়।
এইভাবে ২০২৫ সালের ঈদুল আজহার দিনটিও ছিল পুলিশের জন্য দায়িত্বপূর্ণ, কিন্তু আত্মতৃপ্তিতে ভরা। তাঁদের নিঃশব্দ ত্যাগ ও সতর্ক উপস্থিতিই নিশ্চিত করেছে দেশের মানুষের নিরাপদ ঈদ উদ্যাপন।